এত বুদ্ধি কি আর আমার আছে! আমি ব্যর্থ একজন ব্যক্তি আমার দ্বারায় কিছুই হবে না। আমার বুদ্ধি নেই আমি কিছুই বুঝতে পারি না ওদের মত আমার দ্বারা কিছুই হবে না। ” এইসব ভাবনাগুলি বন্ধ করো এগুলো ভাবাও ভুল।
আজ আমি আপনাকে একটি মানুষের জীবনের কাহিনী বলব যেগুলো শোনার পর আপনার ভাবনা চিন্তার সম্পূর্ণ পাল্টে যাবে।
৩০ বার ইন্টারভিউ দিয়ে তিনি সফল হতে পারেনি, শুধু এখানেই শেষ নয় KFC – তেও ইন্টারভিউর জন্য ২৪ জনকে ডাকা হয়েছিল কিন্তু ২৩ জন যোগ্য বলে মনে হয়েছিল মাত্র একজন বাদ গিয়েছিল, তার নাম কি আপনি জানেন অনলাইন শপিংয়ে নাম বললে যার নাম সবার আগে উঠে আসবে, বিশ্বের সব ধনী ব্যক্তিদের মধ্যে উজ্জ্বল নক্ষত্র রুপে প্রতিষ্টিত চীনের সবথেকে ধনী ব্যক্তি আলিবাবা কোম্পানির ফাউন্ডার জ্যাক মা। ধ্বনি নয় সামান্য মধ্যবিত্ত পরিবারে তার জন্ম হয় ১০ সেপ্টেম্বর ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে, তার প্রকৃত নাম হল মা ইউন।
বিদ্যালয় জীবন থেকেই তার ব্যর্থতার গল্প শুরু। চতুর্থ ক্লাসের দুই বার, অষ্টম শ্রেণীতে তিনবার, গ্রাজুয়েশন এন্ট্রান্সে ৫ বার তিনি ফেল করেন। আচ্ছা যদি তোমার সাথে এটা ঘটতো তাহলে তুমি কি করতে তুমি যেটা করতে সে সেটা সেদিন করে নিই। তিনি প্রবল ইচ্ছা এবং আবেগের বলে তার ব্যর্থতাকে তিনি করায়ত্ত করেছিলেন।
জ্যাক মা ৯ বছর বয়স থেকেই টুরিস্ট গাইড এর কাজ করতেন, ফরেনারদের সঙ্গে তিনি কিন্তু একটি ভালো সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন, তাই ফরেনারদের সাথে থাকতে থাকতে তার ইংরেজিটা যথেষ্ট পরিষ্কার হয়ে উঠেছিল। আর এই জ্যাক নাম কি এরকমই একজন ফরেনার বন্ধুর দেওয়া। যাইহোক কলেজ শেষ করে তিনি তার জীবনের ক্যারিয়ারটি শুরু করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিলেন।
এখানেও তার ব্যর্থতা শুরুর আগেই আমি বলেছি যে ত্রিশটি জায়গায় তিনি ইন্টারভিউ দিয়ে ও সফল হতে পারিনি। মাত্র একটি কাজের জন্য সরকারি পুলিশ ডিপার্টমেন্টের যায়, সেখানে চারজন বন্ধু গিয়েছিলেন তিনজন সিলেক্ট হয়েছিলেন আর একজন ব্যর্থ হয়েছিল তিনি হলেন জ্যাক মা।
এরপর হার্ডওয়ার বিজনেস স্কুলে তিনি দশবার এপ্লাই করেছিলেন, কিন্তু একবারও তার অ্যাপ্লিকেশন অ্যাকসেপ্ট করেননি তিনি আবার রিজেক্ট হয়ে যান। এত ব্যর্থতা কিন্তু তবুও সমস্ত কিছু সহ্য করেছিলেন তিনি, তিনি নিজে ব্যর্থতাকে হার মেনে নেন।
জ্যাক মা ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দে প্রথম US যান। এবং সেখানে গিয়ে ইন্টারনেটে “বিয়ার” শব্দটি সার্চ করেন, তিনি অবাক হয়ে যান তিনি সেখানে গিয়ে বিশ্বের সমস্ত কিছু খবর পেয়ে যাচ্ছিলেন কিন্তু চায়না সম্পর্কে বিশেষ তথ্য তিনি সেখানে পাননি। তার মাথায় আইডিয়া আসে হাংজু তে ফিরে “ চায়না ইয়োলো ” নামে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেন, যেখানে বিজনেসম্যান এর সঙ্গে বিজনেসম্যান এর কানেক্ট করা হয়। সেটিও সেমন ভাবে কাজ করেনি কিন্তু জ্যাক মতো হাল ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নয়, জ্যাক মা চেয়েছিলেন’ ওয়ার্ল্ডের ইকোর্মাস সিস্টেমের মধ্যে পরিবর্তন আনতে, তিনি কাজ করতে থাকেন সকলেই তাকে ছেড়ে দেন কিন্তু তিনি আশাকে ছাড়েননি।
১৯৯৯ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে তিনি আলিবাবা নামে একটি কোম্পানি স্থাপন করেন। তিনি এরপর 25 মিলিয়ন ফরেন ক্যাপিটাল ইনভেস্ট পান। তিনি তার বিজনেস এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। আবার বিপদে এলো যখন চিনে “ ইবে” নামে একটি কোম্পানি বিজনেস করত এলো।
তিনি ভবিষ্যৎ বুঝতে পারেন যে যদি ইবের সাথে কম্পিটিশনে না নামা হয়, b2c অথাৎ বিজনেস ম্যান টু কাস্টমার এই সিস্টেমে যদি আলিবাবাকে না নামানো হয় কিছুদিনের মধ্যেই আলিবাবার বিপদ ঘনিয়ে আসবে। তাই তিনি তাওবাও নামে b2c ইকমার্স কোম্পানি লঞ্চ করলেন। দেশাত্মবোধের স্বপ্ন জুড়ে দিলেন এই কোম্পানির সাথে। দেখতে দেখতে ইবে কে পেছনে ফেলে এগিয়ে গেল তাওবাও কোম্পানি। 2014 সালের মধ্যে তার আইপিও 25 বিলিয়নে পৌছায়।
বর্তমানে অর্থাৎ আগস্ট 2018 রিপোর্ট অনুযায়ী তিনি আজ 38.6 বিলিয়ান ইউএস ডলারের মালিক তুমি বলতে পারো তার ট্যালেন্ট ছিল। না তার ট্যালেন্ট ছিলনা তাই আজও বিজনেস ইকোনোমিক পাঠ তিনি কোনোদিন দেখেন না।
তিনি শুধু অ্যাডভাইজার হিসেবে কাজ করেন।উনার ছিল ধৈর্য আর নিজের প্রতি বিশ্বাস।
তাই আর নয় জেগে ওঠো আজই জেগে ওঠো জেগে ওঠো 18 বছরের উদ্যমে। চলতে গিয়ে তোমাকে যদি ব্যর্থতা গ্রাস করে সেই ব্যর্থতাকেই সরিয়ে তুমি সেখান থেকে নিজের লক্ষ্যকে স্থির করো।
জ্যাক মার একটি বিশেষ উক্তি আপনাদেরকে আজ জানাই তিনি বলেছিলেন “আজকের দিনটি খারাপ যাবে এবং পরের দিনটি আরো খারাপ যাবে কিন্তু তারপরের দিন সূর্য আসবেই।”