প্রাচীন তক্ষশীলা মহাবিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ও রাষ্ট্রনীতির অধ্যাপক চাণক্য বা কৌটিল্য ছিলেন মৌর্য সাম্রাজ্যের প্রধান রাজ উপদেষ্টা।চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের প্রধান রাজ পরামর্শ দাতা। তাঁর রচিত অর্থশাস্ত্রের বিচারধারা আজ আমি আপনাদের সামনে নিয়ে এসেছি আশা করি আপনি যদি এই নীতি গুলি মেনে চলেন তাহলে অবশ্যই আপনি আপনার জীবনের পথে সাফল্য পেতে পারবেন তাহলে আসুন জেনে নিই যে চাণক্য বা কৌটিল্যের সেই নীতি বাক্য গুলি কি ছিল।
যদি তুমি জন্ম থেকে এবং মৃত্যু চক্র থেকে মুক্তি থাকতে চাও, তাহলে ইন্দ্রিয় সুখের জন্য যে বিষয়বস্তু গুলি পেছনে তুমি অহন ঘুরে বেড়াই পেয়েছ তাকে চিরতরে ত্যাগ করো। ঠিক যেমনভাবে বিষয়কে ত্যাগ করা হয়, এবার সততা, মহত্ব, দয়া, অশুদ্ধতাকে আপন করে নাও ঠিক যেমনভাবে অমৃতকে আপন করে নেওয়া উচিত।
যে অপরের গুপ্ত ও গোপনীয় বিষয়ের মধ্যে নিজেকে প্রবেশ করায়, তার বিনাশ ঘটে ঠিক যেমন ভাবে সাপ পিপড়ের দলের মধ্যে গিয়ে মারা যায়। সৃষ্টিকর্তা প্রত্যেকের সম্পূর্ণ আশা পূরণ করে না। তাইতো স্বর্ণের মধ্যে সুগন্ধ প্রদান করেনি।
বেত ভিক্ষে পুষ্প সৃষ্টি হয় না, চন্দন বৃক্ষের ফুল সৃষ্টি হয় না, বিদ্বান ব্যক্তির ধন প্রাপ্তি হয় না, রাজার দীর্ঘ আয়ু হয় না। ঔষধ এর মধ্যেই অমৃত শ্রেষ্ঠ ঔষধ, ইন্দ্রিয় সুখের মধ্যে ভোজন শ্রেষ্ঠ সুখ। সব ইন্ডিয়ার মধ্যে নেত্র শ্রেষ্ঠ ইন্দ্রিয়। এবং অঙ্গের মধ্যে মস্তিষ্ক শ্রেষ্ঠ অঙ্গ।
যে সংবাদ বহন করে সে আকাশে যেতে পারে না। অপার্থিব জগৎ থেকে কোন সংবাদ আসে না। অপার্থিব জগতের বসবাসকারীদের সাথে কোন সম্পর্ক করা যায় না। বিদ্বান মানুষেরা এই সম্পর্কে বক্তব্য প্রকাশ করে।
এই সাতজন যদি ঘুমিয়ে পড়ে জাগিয়ে দিতে হয় :- ১. ক্ষুধার্থ ব্যক্তি , ২. ভীতু ব্যক্তি, ৩. বিদ্যার্থী, ৪. সেবক, ৫. পাহারাদার, ৬. হিসাব রক্ষক, ৭. অর্থ রক্ষক
এই সাতজনকে কখনো জাগিয়ে দিতে নেই :- ১. বিষাক্ত পোকামাকড়, ২. বাঘ, ৩. সাপ, ৪. রাজা, ৫. ছোট বাচ্চা, ৬. অন্যের কুকুর, ৭. মূখ্য ব্যক্তি
যে অর্থ উপার্জনের জন্য বেদ অভ্যাস করে, যে নিচু কাজ করা ব্যক্তিদের অন্য ভক্ষণ করে, তার কাছে কোনো শক্তি থাকে না, সে একজন চক্রহিন সাপের সমান। যার ভয়ে কেউ ভীত হয় না যার প্রসন্নতা অপরকে কিছু প্রদান করে না। যার অস্তিত্ব কাউকে নিয়ন্ত্রিত করতে পারে না। যে কাউকে রক্ষা করতে পারেনা সে অপরের ভালো করতে পারে না।
যদি সাপ তার চক্র খাড়া করে তবে তা সামনের জনের কাছে ভয় প্রদর্শনের জন্য যথেষ্ট। তার বিষ আছে না নেই তা সেই সময়ে বিচার করা হয় না। সকালে কর্মের বিষয়ে চিন্তা করো, দুপুরে মায়ের বিষয়ে চিন্তা করো, রাত্রে চোরের বিষয়ে চিন্তা করা উচিত।
দরিদ্রতাকে ধৈর্যের সঙ্গে জয় করো। পুরনো বস্ত্রকে সর্বদা পরিষ্কার রাখো। বাশি অন্যকে সর্বদা গরম করো, কুৎসিত রুপকে সর্বদা ভালো ব্যবহার দ্বারা জয় করো।
আজকে চাণক্য নীতির এই অধ্যায়টি এখানেই শেষ করলাম যদি আপনি এই নীতি গুলি মেনে চলেন তাহলে আপনার জীবনের পথে অনেক সহজ হয়ে উঠবে এবং আপনি নিজেকে ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠা করতে।