এপিজি আব্দুল কালাম এর পুরো নাম হল আবুল ফাকির জাইনুলাবদীন আব্দুল কালাম। ভারতবর্ষের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিজ্ঞানী। 1931 খ্রিস্টাব্দে 15 আগস্ট তামিলনাড়ুর রামেশ্বরমে তার জন্ম। তিনি একদিকে যেমন মিসাইল ম্যান নামে পরিচিত তেমনি তিনি সারা পৃথিবীর বুকে এক জ্বলন্ত প্রদীপ রূপে আত্মপ্রকাশ করে রয়েছে। তারই জীবনের কিছু অনুপ্রেরণা মূলক কথা এবং কাহিনী নিয়ে আজকে আমি আপনাদের বলবো।
সফল যারা তারা কেমন এই প্রশ্নটা অনেকেরই, আমি বা আপনি কেউ তার বাইরে নয়। আদর্শ মানুষের জীবন চর্চা করে দেখা আমাদের দরকার নিজেকে সেই জায়গায় প্রতিষ্ঠা করার জন্য।
বাংলায় একটা সুন্দর কবিতা রয়েছে “মহাজ্ঞানী মহাজন যে পথে করে গমন রয়েছেন প্রাতঃস্মরণীয় সেই পথ লক্ষ্য করে অন্য কোনো জন পরে আমরাও হব পরণীয়” ।
আমরা কথা বলছি বিখ্যাত সাইন্টিস্ট ডক্টর এপিজে আবদুল কালাম কে নিয়ে।
বয়স তখন মাত্র 10 বছর তখন তার বাড়িতে বিদ্যুৎ আসেনি, তার সেই কাহিনীর কথা তিনি তার গ্রন্থের মধ্যে তুলে ধরেছিলেন, সন্ধ্যা নেমেছে কেরোসিনের প্রদীপ জ্বালিয়ে পড়তে বসতো সে আর সেই কেরোসিন ও আসতো রেশন কার্ড থেকে।
তিনি তখন পঞ্চম শ্রেণীতে পড়তেন শিবাসু ব্রহ্মানিয়া ছিলেন তার পছন্দের শিক্ষক। একদিন ব্ল্যাকবোর্ডে তিনি একটি উড়ন্ত পাখির ছবি এঁকেছিলেন, পাখিরা কিভাবে ওরে কিভাবে তারা উড়তে উড়তে পথ পাল্টায় তিনি কালাম স্যার দের শেখাচ্ছিলেন, 25 মিনিটের ক্লাস এরপর তিনি জানতে চেয়েছিলেন সবার কাছে যে “বুঝতে পেরেছ ?”, লেখক তখন দ্বিধাহীনভাবে বলেছিলেন যে “না” সে বুঝতে পারেনি। ক্লাসের অনেক ছাত্রই বলল এবং ক্লাসের অনেক ছেলেই বললেন যে বুঝতে পারেননি স্যার কিন্তু রাগ করলেন না। বরং বিকেলে তিনি সবাইকে নিয়ে গেলেন রামেশ্বরমের সমুদ্রসৈকতে, জলের করতাল ও পাখিদের কিচিরমিচির গান। সত্যিই সেই কাহিনীর কথা তিনি তাঁর লেখনীর মধ্যে বারবার তুলে ধরে ছিলেন।
স্যার জানতে চাইলেন ওড়ার জন্য পাখিদের ইঞ্জিনটি কোথায় ? কিছুক্ষণ পর আঁধার নেমে এলো কিন্তু তার আগেই শিক্ষক তাদের শিখিয়ে দিয়েছিলেন পাখিরা উড়ে তাদের ইচ্ছাশক্তির প্রেরণায়। মনের কোণে শুধু স্বপ্ন আঁকলেই হবেনা চাই নিরবচ্ছিন্ন জ্ঞান আহরণ আর ইচ্ছা শক্তি দৃঢ় সংকল্প।
যদি কামারশালায় যাওয়া হয় তাহলে দেখা যাবে আগুনে লোহা গলিয়ে কিভাবে নির্দিষ্ট ছাঁচের হাতুড়ি বানানো হয়। ঠিক একইভাবে জীবনের লক্ষ্য থাকে নির্দিষ্ট করতে হবে। স্বপ্ন দেখতে হবে দৃঢ় সংকল্প মনের মধ্যে আঁকতে হবে, তবেই তো একজন পাখির মতো ওরা যাবে।
জ্ঞান তোমাকে মহান করবে জ্ঞান তোমাকে সফলতা দাঁরে টেনে নিয়ে যাবে। আর করার সময় নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে কিন্তু মনে রাখবে সমস্যা যেন কোনোভাবেই তোমার ওপর গুরুগিরি করতে না পারে। সমস্যাটাকে পাশ কাটানোর চেষ্টা করবে না। সমস্যার সমাধান করে এগিয়ে যেতে হবে তোমাকে দেখবে সফলতা তোমার সামনে কেমন ঝিলমিল করে দাঁড়িয়ে আছে।
লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য অবশ্যই কঠিন পরিশ্রম করতে হবে, অর্জিত জ্ঞানকে কাজে লাগাতে হবে সময়ের প্রতি অবশ্যই শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। তিনি বলেছিলেন আমি আমার জীবন দিয়ে বুঝেছি কেউ যখন তার স্বপ্ন পূরণের দিকে সচেষ্ট হয়, তার মনে এক ধরনের জেদ তৈরি ফলে তার কাজের ক্ষমতা আর দক্ষতা বেড়ে ওঠে। স্বপ্ন আর কাজের মধ্য দিয়েই তৈরি হয় মেধা।
মনে রাখবে তুমি যতই বিশেষক হও না কেন তোমাকে সবসময় প্রশিক্ষণ এর মধ্যেই থাকতে হবে। কারণ অনুশীলনের বিকল্প আর কিছুই হয়না। স্বপ্ন যদি সত্যি করতে চাও তোমার যতটুকু শক্তি তার সবটুকু প্রয়োগ করতে প্রস্তুত থাকতে হবে।
তুমি যখন কোনো লক্ষ্য পূরণের জন্য কাজ করবে দেখবে সেখানে অনেক ধরনের সমস্যা আসবে। হয়তো সমস্যা সমাধান করতে পারছ না নিজেকে ব্যর্থ বলে মনে হতে পারে। কিন্তু সত্যি কারের সফল তারাই হয় যারা ব্যর্থতাকে ভয় করে না, বরং তারা জানে ব্যর্থতা জয় করেই এগোতে হবে। তারা জানে ব্যর্থ হলেই জীবনের সবকিছু শেষ হয়ে যাবে না। ব্যর্থ হলে আবার নতুন করে সব শুরু করতে হবে, ব্যর্থ হলে প্রথমে ধৈর্য রাখতে হবে। মনে রেখো পরিস্থিতি সামলাতে হবে নিজেকেই এর জন্য দরকার হলো সাহস।
আজ আপনাদের এপিজি আবদুল কালামের কিছু বাণী এবং একটি ছোট্ট জীবনের কাহিনী জানালাম আশা করি আপনারা যদি সাফল্যের দিকে পৌঁছাতে চান তাহলে এই বিষয়গুলি অবশ্যই মনে রাখবেন এবং নিজের সাফল্যের পথে যতবারই আপনারা ব্যর্থ হন না কেন আবার আপনারা ঘুরে দাঁড়িয়ে ফাইট করবেন।